জেনে নিন স্ত্রী স’হবা’সের দোয়া ও বেশ কিছু নিয়ম!

জেনে নিন স্ত্রী স’হবা’সের দোয়া ও বেশ কিছু নিয়ম!

মানুষ সামাজিক জীব। সমাজে মিলে-মিশে বসবাস করা এবং পরিবার সৃষ্টির মাধ্যমে বংশ বাঁচিয়ে রাখার সহজাত বৈশিষ্ট্য রয়েছে মানুষের মধ্যে। আর নারী-পুরুষের মধ্যে পারস্পারিক যৌন ক্রিয়ার মাধ্যমে ঘটে থাকে এই বংশ বিস্তার। এই বংশ বিস্তারের বৈধ পথ হলো বিয়ে। বিয়ের মাধ্যমে সৃষ্টি হয় স্বামী আর পুরুষের সম্পর্ক। বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রীর মেলামেশা হয়ে ওঠে বৈধ। এত থাকে কল্যাণ, এবং এটা ছাওয়াবের কাজ।
স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে মেলামেশার ক্ষেত্রে রয়েছে কিছু নিয়ম-নীতি ও দোয়া। বাংলাভিশনের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো স্ত্রী সহবাসের দোয়া।

দোয়টি এই- بِسْمِ اللّهِ اللّهُمَّ جَنِّبْنَا الشَّيْطَانَ وَ جَنِّبِ الشَّيْطَانَ مَا رَزَقْتَنَا

উচ্চারণ : বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শায়ত্বানা ওয়া জান্নিবিশ শায়ত্বানা মা রাযাক্বতানা।

অর্থ : ‘হে আল্লাহ! তোমার নামে আরম্ভ করছি, তুমি আমাদের নিকট হতে শয়তানকে দূরে রাখ। আমাদের এ মিলনের ফলে যে সন্তান দান করবে, তা হতেও শয়তানকে দূরে রাখ।’

আরও পড়ুন: রোজায় স’হবাসে মানতে হবে যেসব বিধান

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ আপন স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হওয়ার ইচ্ছা করে তখন উক্ত দোয়া পড়ে যেন মিলিত হয়। এ মিলনে যদি তাদের কিসমতে কোনো সন্তান আসে, সে সন্তানকে শয়তান কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। (বুখারি, মুসলিম, মিশকাত)।

দোয়া ছাড়াও স্ত্রী সহবাসের রয়েছে কতিপয় নিয়ম। যে নিয়মগুলোতে স্ত্রী সহবাস হয়ে ওঠে সুখকর এবং আনন্দপূর্ণ। যেমন-

সহবাসের পূর্বের কিছু কাজ-

> স্বামী-স্ত্রী উভয়ই পাক পবিত্র থাকবে।
> “বিসমিল্লাহ” বলে সহবাস শুরু করা মুস্তাহাব। ভুলে গেলে যদি বীর্যপাতের পূর্বে স্মরণ হয় তাহলে মনে মনে পড়ে নিতে হবে।
> সহবাসের পূর্বে সুগন্ধি ব্যবহার করা। যা আল্লাহর রাসুলের সুন্নাত।
> সব ধরনের দুর্গন্ধ জাতীয় জিনিস পরিহার করা

সহবাসকালীন কিছু কাজ থেকে বিরত থাকা-

> কেবলামুখি হয়ে সহবাস না করা।
> একেবারে উলঙ্গ না হওয়া।
> স্ত্রীকে পরিপূর্ণ তৃপ্তি দান করার পূর্বে বিচ্ছিন্ন না হওয়া।
> স্ত্রীর জরায়ুর দিকে না তাকানো।
> সহবাসের সময় স্ত্রীর সহিত বেশি কথা না বলা।
> ভরা পেটে স্ত্রী সহবাস না করা।
> উল্টাভাবে স্ত্রী সহবাস না করা।

যে সময়গুলোতে স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকা উচিত-

> স্ত্রীর হায়েজ-নেফাসের (ঋতুকালীন) সময় সহবাস না করা।
> চন্দ্র মাসের প্রথম এবং পনের তারিখ রাতে মিলিত না হওয়া।
> সফরে যাওয়ার আগের রাতে স্ত্রী সহবাস না করা।
> জোহরের নামাজের পরে স্ত্রী সহবাস না করা।

এছাড়াও দুটি নিয়ম অনুসরণ করা-

> স্বপ্নদোষ বা নাপাক থাকলে গোসল না করে স্ত্রী সহবাস না করা।
> বীর্যপাতের সময় মনে মনে নির্ধারিত দোয়া পড়া। কেননা এতে সন্তান জন্ম নিলে শয়তানের কুপ্রভাব থেকে মুক্ত থাকে।

আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে বৈধ পথে সুখ দান করুক। আমাদের দাম্পত্য জীবনে আনুক অফুরন্ত আনন্দ। সেই সঙ্গে প্রত্যেকটি মুসলিম পরিবারে জন্ম নিক একেকটি হযরত ওমরের মতো সন্তান।